১৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

শেরপুরে বঙ্গবন্ধুর নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে মুজিব ভক্তদের বিনামুল্যে চা খাওয়াচ্ছেন এক যুবক

admin
প্রকাশিত মে ৪, ২০২১
শেরপুরে বঙ্গবন্ধুর নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে মুজিব ভক্তদের বিনামুল্যে চা খাওয়াচ্ছেন এক যুবক

Sharing is caring!

শেরপুরে বঙ্গবন্ধুর নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে মুজিব ভক্তদের বিনামুল্যে চা খাওয়াচ্ছেন এক যুবক

 

 

মোঃ তারিফুল আলম তমাল,শেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে দোকানের নাম করন করে মুজিব ভক্তদের বিনামুল্যে চা খাওয়াচ্ছেন হারুন অর রশিদ নামে এক যুবক। হারুন অর রশিদ শেরপুর সদর উপজেলার বাজিতখিলা গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে। দোকানের নাম দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু নাইট স্টোর। যুবক হারুন। ১ ছেলে ১ মেয়ের জনক। ৩ ভাই ১ বোনের মধ্যে হারুন ৩য়। বাবা আব্দুল মালেক বেশ আগেই মারা গেছেন।

বোনটির বিয়ে দেওয়ার পর অন্য ২ভাই বিবাহ করে আলাদা সংসার করছে। হারুনের বৃদ্ধ মা সহ ৫ জনের সংসার।জীবিকার তাগিদে ছোট বেলায় হারুন ঢাকায় চলে যায়। দীঘর্দিন জুতার কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে কারখানার পাশে থাকা আওয়ামীলীগের অফিসে গিয়ে নেতাদের কাছ থেকে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন সম্পকে জানতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রানিত হয় হারুন। গত ৫ বছর আগে সে কারখানার কাজ বাদ দিয়ে নিজ গ্রামে চলে আসে। গ্রামে এসেই তার লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতেই মধ্য কুমরী গ্রামের বাজিতখিলা গাজীরখামার রোডে তার এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেন । তার পরিবারের সদস্যদের বেচে থাকা ও জীবন জীবিকার একমাত্র অবলম্বন এ দোকানটি। এ দোকানটি পরিচালনা করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোন রকমে চলে চলে তার সংসার। সেই সাথে ব্যবসার কিছু মুনাফা থেকে মুজিব ভক্তদের বিনামুল্যে চা খাওয়ান তিনি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে দেখিনি, স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক পরে আমার জন্ম। এ দেশে যদি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হতো, তাহলে এ দেশ কখনো স্বাধীন হতোনা, আমরা স্বাধীনতা পেতাম না। অথচ আমি যে ইউনিয়নে বসবাস করছি, যে গ্রামটি আমার জন্মস্থান, সে গ্রামটি জামায়াত অধ্যুষিত ।

ফাঁসিতে মৃত্যদন্ড প্রাপ্ত জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের জন্মস্হান এগ্রামেই। ফলে এ গ্রামটির আরো একটি অলিখিত নাম রয়েছে দ্বিতীয় পাকিস্থান। এ নামটি আমি ঘোচাতে চাই। সে কারণেই বঙ্গবন্ধু নাইট স্টোর নাম দিয়ে দৈনিক আমার ব্যবসার আয় থেকে প্রতিদিন ৬০/৭০ জনকে বিনা টাকায় চা খাওয়াই। এছাড়া করোনাকালীণ সময়ের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যাহারা মাস্ক ছাড়া আমার দোকানে আসে চা খেতে, তাদেরকে আমি বিনামূল্য মাস্ক দেই। আমি একদিনে হয়তো এ গ্রামটিকে জামায়াত শিবীর মুক্ত করতে পারবো না, তবে আমি চেষ্টা চালিয়ে যাবো আজীবন।

হারুনকে জিঙ্গেস করা হলো, দেশের এখন প্রত্যেকটি পাড়া মহল্লায় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের শক্তিশালী কমিটি আছে, তারা প্রতিনিয়ত এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকাটি জামায়াত অধ্যুষিত জেনেও সেখানে আপনি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক বাড়ানোর যে সিদ্ধান্তটি আপনি নিয়েছেন, নিঃসন্দেহে তা প্রশংসার দাবীদার।

কিন্তু এ সরকারের যদি প্রেক্ষাপট পরিবতর্ণ হয়, তখন আপনার অবস্থা কি হবে, তা কি একবার ভেবে দেখেছেন আপনি? ৮ম শ্রেনী পযন্ত পড়ালেখা এই যুবকের সাফ উত্তর, এলাকায় টিকতে না পারলে আবার না হয় দেশের জন্য, আমার প্রাণের নেতা, আমার স্বপ্ন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্য যুদ্ধ করে নিজের জীবনটাকে বিলীয়ে দিবো। তবুও দেশ বিরোধীদের কাছে মাথা নত করবোনা।

বাজিতখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আমের আলী সরকার জানান, যুবক হারুনের দোকানটির আমি উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করেছিলাম। তার পর থেকে দোকানটি চলছে। তার এ দোকানের প্রচার প্রচারনা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আমি তার এ উদ্দেশের সফলতা কামনা করছি।শেরপুর সদর উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আল হেলাল জানান, আমি তার দোকানের ব্যাপারে জানি। মাঝে মধ্যে তার দোকানে গিয়ে চা খেয়ে আসি। তার উদ্দেশ্যটি মহৎ বলেই মনে হচ্ছে।