Sharing is caring!

জাহিদুল ইসলাম, গাইবান্ধাঃ
জেলার একমাত্র সরকারি ভারিশিল্প কারখানা রংপুর চিনিকলসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানার অবস্থানের কারণে শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত। অনেক ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমৃদ্ধ ঐতিহ্যবাহী জনপদ।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার প্রধান রেলস্টেশন এবং রেলপথে রংপুর বিভাগের প্রবেশদ্বার মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনের ওপর দিয়ে প্রতিদিন অনেকগুলো আন্ত:নগর ট্রেন যাতায়াত করলেও যাত্রাবিরতি নেই রাজধানীগামী একটি ট্রেনেরও।
আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবীতে বছর দুয়েক আগে এলাকার লোকজনের আবেদনের প্রেক্ষিতে রেল কর্তৃপক্ষ জনবল সংকটের কারণে “ক্লোজডাউন” হওয়া এ স্টেশনে পরবর্তীতে আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি দেয়া হবে বলে দীর্ঘ দিনেও এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়ায় এলাকার রেলযাত্রীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
অচিরেই রাজধানীগামীসহ সকল আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবীতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবী ও ছাত্র সংগঠন।
জানা গেছে, বৃটিশ শাসনামল ও পরবর্তীতে অবিভক্ত বাংলার সময়ও সরাসরি কোলকাতার টিকেট বিক্রিকরার মর্যাদাসম্পন্ন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা কারণে গাইবান্ধা জেলার সবচাইতে উন্নত উপজেলা গোবিন্দগঞ্জের প্রধান রেলস্টেশন মহিমাগঞ্জের ওপর দিয়ে আপ-ডাউন মিলিয়ে প্রতিদিন আটটি আন্ত:নগরসহ ১৬টি ট্রেন চলাচল করে।
এরমধ্যে লোকাল ও মেইল ট্রেন এবং দিনাজপুর থেকে সান্তাহারের মধ্যে চলাচলকারী আন্ত:নগর দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়া বাকী ছয়টি ট্রেনই এখানে যাত্রা বিরতি করে না। এলাকার রেলযাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, এ রেল রুটের অন্যান্য স্টেশনের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ রাজস্ব আদায় হলেও অজ্ঞাত কারণে জনগুরুত্ব সম্পন্ন এ স্টেশনে রাজধানী ঢাকা ও বুড়িমারী স্থলবন্দরগামী আন্ত:নগর ট্রেনগুলোর যাত্রাবিরতি নেই। রংপুর চিনিকল, বেশ কয়েকটি ব্যাংক, সরকারি ও বেসরকারি অনেকগুলো অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কারণে এখানকার শত শত মানুষকে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হয়।
এ জন্যে তাদের বোনারপাড়া, গাইবান্ধা, বগুড়াসহ বিভিন্ন স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে উঠতে হয়। কিন্তু আন্ত:নগর ট্রেনগুলোর যাত্রাবিরতি না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের। একইভাবে ঢাকা থেকে এসে ওই সব স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে সিএনজি অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন ছোট ছোট হালকা যানবাহনে চড়ে মহিমাগঞ্জে পৌঁছুতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন ট্রেন যাত্রীরা আরেক দফা। এ কারণে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ও পাশ^বর্তী সাঘাটা উপজেলার একাংশের রেলযাত্রীসহ একটি বিশাল এলাকার মানুষের চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। একই সাথে ট্রেনের বিকল্প হিসেবে সড়ক পথ ব্যবহার করায় সরকারও হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। জনদুর্ভোগ লাঘবে অবিলম্বে এখানে সকল আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবি কজরেছেন এলাকার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ।
উত্তরাঞ্চল ফেডারেল সাংবাদিক পরিষদের (উফেসাপ) মহাসচিব ও গোবিন্দগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি কৃষ্ণকুমার চাকী অভিযোগ করে বলেন, অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনেও ঢাকাগামী আন্ত:নগর রংপুর এক্সপ্রেস ও লালমনি এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতি থাকলেও ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার প্রধান স্টেশন মহিমাগঞ্জে যাত্রাবিরতি না থাকা দুঃখজনক।
এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল লতিফ প্রধান জানান, বর্তমান জনবান্ধব সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে অবিলম্বে মহিমাগঞ্জ স্টেশনে সকল আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশা করছি।
এ দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা খুরশীদ আলম পলাশ অবিলম্বে মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনে সকল আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির ব্যবস্থা না নিলে আগামি ১৬ জুলাই থেকে এখানে মানববন্ধন, সভা-সমাবেশ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে ঘোষনা দিয়েছেন। এসব কর্মসূচির সাথে স্থানীয় সকল রাজনৈতিক, ছাত্র ও পেশাজীবী সংগঠন একাত্মতা ঘোষণা করেছে।