Sharing is caring!

আব্দুল করিম, চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ নগরের কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনর্চাজ( ওসি) মোহাম্মদ মহসিন আলোচিত এই অফিসার কুখ্যাত অপরাধীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনেন।
কিন্তু আসামিকে শুধু কারাগারে প্রেরণ করে ক্ষান্ত হন না। তিনি নারী অপরাধীদের পুনর্বাসনেও কাজ করেন। আবার নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি, ইভটিজিং, যৌতুকবিরোধী ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়ে প্রচার চালান। সেই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনটি পেজ থেকে নারী নির্যাতনবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে নারীদের কাছ থেকে তথ্য নেন।
এসব কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যতিক্রমী একটি পুরস্কার পেয়েছেন মোহাম্মদ মহসিন। বাংলাদেশ উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ গ্রহণ করেছেন তিনি। বাংলাদেশ পুলিশ ওসি মোহাম্মদ মহসিনকে দিয়েছে ‘মেডেল ফর প্রমোশন অব জেন্ডার সেনসিটিভিটি’ পুরস্কার। বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল কনভেশন সেন্টারে বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ বিতরণ করা হয়। কৃতিত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডের জন্য মোট ১০জনকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করা হয়।
সেখানে একমাত্র পুরুষ সদস্য হিসেবে পুরস্কার পান মোহাম্মদ মহসিন। পুরস্কারপ্রাপ্ত বাকি ৯ জনই নারী পুলিশ।
বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ উপলক্ষে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে মোহাম্মদ মহসিনের পুরস্কার পাওয়ার কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, ওসি মহসিন নারী অপরাধীদের আলোর পথে আনায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। তিনি মাদক মামলার আসামি পাখিকে সুপথে ফিরিয়েছেন। মাদক ছেড়ে পাখি এখন টেইলারিংয়ের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ২১ মামলার আসামি জুলেখা, ১১ মামলার আসামি শাহনাজ বেগম সানু, ৯ মামলার আসামি খালেদা বেগম এবং ৭ মামলার আসামি রহিমা অপরাধ জগত ছেড়েছেন। এখন মুদির দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এ ছাড়া অপরাধ জীবন থেকে বেরিয়ে বাসাবাড়িতে বুয়ার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন ফাতেমা, লাকি ও সাহিদা।
কুখ্যাত নারী অপরাধীদের সুপথে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি নারী নির্যাতন প্রতিরোধেও ভূমিকা রেখেছেন ওসি মহসিন। ফেনীতে মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত হত্যাকাণ্ডের পর যখন দেশে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়, তখনই চট্টগ্রামে এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে বাসে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠে। তখনই দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন মহসিন।
পাশাপাশি তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ব্যতিক্রমী প্রচার চালিয়ে থাকেন। ব্যানার ফেস্টুন ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারী নির্যাতন বিরোধী প্রচারণায় সরব থাকেন। তার এই কর্মকাণ্ডই তাঁকে এনে দিয়েছে ‘মেডেল ফর প্রমোশন অব জেন্ডার সেনসিটিভিটি’ পুরস্কার।
পদক গ্রহণের পর প্রক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চাই। অসহায় নারীর পাশে থাকতে চাই। শুধু আইন প্রয়োগ করে নয়, সহমর্মিতা দিয়েও অপরাধীকে আলোর পথে আনা যায়। আমি এই কাজটুকুই করেছি। ’ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং থানার সহকর্মীদের এই পুরস্কার উৎসর্গ করেন মহসিন।