১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৫ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

মাগুরা জেলায় কেমন আছে ৫ হাজার কোটি টাকার অনুদানের বাইরের মানুষ

admin
প্রকাশিত এপ্রিল ৫, ২০২০
মাগুরা জেলায় কেমন আছে ৫ হাজার কোটি টাকার অনুদানের বাইরের মানুষ

Sharing is caring!

ফারুক আহমেদ, মাগুরা প্রতিনিধি :

করোনার প্রাদুর্ভাবে বিশ্বব্যাপী জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, বাদ পড়ছে না ইউরোপ-আমেরিকার মতো উন্নত দেশ সহ পৃথিবীর প্রায় অন্য সব কয়টি দেশ। বাংলাদেশের মতো দারিদ্র্য পীড়িত দেশে করোনার প্রভাবে নানামুখী সমস্যা ও সংকটে পড়তে চলেছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। মাগুরায় দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ গুলো যেমন কারো কাছে সহজে হাত পাততে পারছেন না তেমনি পাচ্ছেন না সরকারি ন্যূনতম সাহায্য, ঠিক যেন বালিশের ভিতর মুখ লুকিয়ে কান্নার মত। টানা লকডাউন এর ভিতর ১৫ দিন বাড়িতে নিজেকে আটকে রেখেছিলেন মনি কুমার দাস (৬০) বাড়ি শহরতলির নিজ নান্দুয়ালি গ্রামে পেশায় পাদুকা মেরামতকারী, মাগুরার ভায়না মোড়ে ৩৫ বছর ধরে নিয়মিত জুতা মেরামত ও পালিশের কাছ করছেন । আগে প্রতিদিন ৫০০/৬০০ টাকা কামায় ছিল, দিব্যি চলে যেত ১০ জনের সংসার। এখন করোনার প্রাদুর্ভাবে বেশ কিছুদিন কাজকর্ম বন্ধ রাখলেও এখন আর সংসার চলতে চাইছে না, সকালে তার গৃহিণী বানিয়ে রাখা গোবরের বোড়ে বিক্রি করে ২০০ টাকা হাতে দিয়ে বাজার করে আনতে বলল, ১০ জনের সংসারের বাজার এত অল্প টাকায় তো আর হয় না, তাই তিনি নিজেও তার সরঞ্জামাদি নিয়ে ভায়না মোড়ে এসেছেন যদি কিছু হয়। শহরে লোক না থাকায় সকাল থেকে দুপুর অব্দি রোজগার মাত্র ৫০ টাকা। এই দুপুরেও কিছুক্ষণ পর পর আকাশের দিকে তাকাচ্ছেন আর ভাবছেন সামনের দিনগুলো কেমন যাবে। শুনেছেন সরকার সাহায্য দিচ্ছে, কিন্তু কার কাছে দিচ্ছে?

শওকত মোল্লা (৬৫) বাড়ি বেলনগর, পেশা ভ্যানচালক, তিনি ৪৫ বছর ধরে ভ্যান চালান, নাতিপুতি নিয়ে ৭-৮ জনের সংসার, আগে ইনকাম ছিল প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, সবাইকে নিয়ে ভালোই চলছিল, কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবে অনেকদিন কাজকর্ম বন্ধ রেখেছিলেন, আজ কিছু আয়ের আশায় সকালে ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। সকাল থেকে এই পর্যন্ত একটি টাকারও কাজ হয়নি উপরন্ত ৫০ টাকা খরচ, তিনিও কোন সরকারি সাহায্য পাননি।

মাগুরার কাউন্সিল পাড়াতে মুদিখানা দোকানের মালিক মশিয়ার রহমান (৩৮), করোনার প্রভাবে এখন বেচাকেনা নেই বললেই চলে যেখানে আগে প্রতিদিন ১২০০০ টাকা মত বেচাকেনা হতো। লক ডাউন এর কয়েকদিন দোকান একদমই বন্ধ ছিল এখন ক্রেতাশূন্য, এভাবে চলতে থাকলে স্টকে থাকা দুই লাখ টাকার মাল একদমই নষ্ট হয়ে যাবে।

দিনশেষে এই ৫০০০ কোটি টাকা অনুদানের বাইরের মানুষ গুলোর একটি চাওয়া, সরকারি সাহায্য যেন মুখ দেখে দেওয়া না হয় এবং সাহায্য গুলো যেন সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বন্টন করা হয়।