১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

লকডাউনে অসহায় হয়ে পড়েছে শার্শায় খেটে খাওয়া দিনমুজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা

admin
প্রকাশিত এপ্রিল ২, ২০২০
লকডাউনে অসহায় হয়ে পড়েছে শার্শায় খেটে খাওয়া দিনমুজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা

Sharing is caring!

Manual8 Ad Code

বিশেষ প্রতিনিধিঃ সারা দেশের ন্যায় যশোরের শার্শায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করনের নিমিত্তে সেনা ও পুলিশ বাহিনীর টহল শুরু হয়েছে।

 

সরকারী নির্দেশে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এ উপজেলাটি লকডাউন আওতায় আনা হয়েছে, উপজেলার বিভিন্ন বাজারে এলাকায় টহল ও অভিযানে নেমেছে সেনাবাহিনী,পুলিশ সহ ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

 

এসময় আতঙ্কে অপ্রয়োজনে রাস্তায় থাকা মানুষ এলাকা ছাড়লে জনশুণ্য হয় রাস্তা ঘাট। বন্ধ হয়ে যায় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তবে এসময় অনুমোদিত ঔষধ ও খাদ্য দ্রবসহ অনন্যা দোকান খোলা রাখা ছিল।

Manual8 Ad Code

 

Manual6 Ad Code

এ উপজেলা সদরের রেললাইন পাশে দীর্ঘদিন বসবাস করে আসছেন নিম্ন আয়ের ভূমিহীন বেশ কিছু অসহায় পরিবার। তাদের জিবণ চলে দিন আয় দিন খেয়ে কিন্তু বর্তমান এই দুর্যোগে তারা যেন আরো অসহায় হয়ে পড়েছে।

Manual7 Ad Code

 

ভূমিহীন এক ক্ষুদ্র ফুটপাত ব্যবসায়ী নুরইসলাম গাজী পিতা আব্দুল কাদের গাজী জানালেন, আজ কয়দিন হয়েছে রাস্তায় বসতে পারছেন না।

 

Manual5 Ad Code

তার ফুটপাতের খাবারের দোকানটি প্রশাসন বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে। তাই সে আর বিক্রি করতে পারছেনা। অথচ তার সামান্য এই দোকানের ক্ষুদ্র আয়ে চলে তার পরিবারে বৃদ্ধা মা সহ তার ৪/৫ জনের সংসার। জানালেন, একদম বেকার হয়ে গেছি আর দুদিন এভাবে চলতে থাকলে পেটে ভাত জুটবেনা। না খেয়ে মরতে হবে। এদিকে আর ভূমিহীন মালেকা খাতুন জানালেন, আমি খাবারের হোটেল সহ ডেকোরেটরে কাজ কাম করে খায় কিন্তু এখন কাজকাম সব বন্ধ কি করে যে চলবো ভেবে পাচ্ছি না। আমার ছেলেটাও বেকার হয়ে গেছে সে কিছু ঋণদিনা আছে, সামনে দিন কিভাবে কাটবে ভেবে সারারাত ঘুমাতে পারছি না।

 

ইতিমধ্যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে অতি দরিদ্রদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ৬৫০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ করেছেন। তাদের সাহায্যে সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা মহানগরীসহ দেশের ৬৪ জেলায় ৬ হাজার ৫০০ শত মেট্রিক টন চাউল ও নগদ ৫ কোটি পঞ্চাশ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ করেছেন।

 

দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে এই বরাদ্ধ ইতিমধ্যে দেশের সকল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পৌছে গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশে দেশের প্রতিটি জেলায় অতি দরিদ্রদের জন্য ত্রান সহায়তায় হিসেবে বরাদ্দগুলো পাঠানো হয়েছে।

 

জেলা প্রশাসকরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করে বরাদ্দকৃত ত্রান বিতরণ করেছেন।

 

দুযোর্গ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব (ত্রাণ-১) মো: শাহজাহান স্বাক্ষরিত বরাদ্দ পত্রে দেখা যায় প্রতিটি জেলার আয়তন ও দরিদ্রদের সংখ্যা অনুযায়ী চাল একশ টন থেকে দু’শ টন ও নগদ টাকা সাত লক্ষ থেকে বিশ লক্ষ পর্যন্ত জেলাওয়ারী বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। স্ব স্ব জেলা প্রশাসকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ দিবেন।

 

এ বিষয়ে ত্রান প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান গণমাধ্যামকে বলেন, বরাদ্দপত্রে ত্রান বিতরণে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা না থাকলেও জেলা প্রশাসকদের মৌখিকভাবে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাতে জেলা প্রশাসকরা ইচ্ছে করলে খিচুরী রান্না করেও দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করতে পারবেন। এছাড়া চাল ও নগদ টাকাতো দিতে পারবেনই।

 

শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মন্ডল গণমাধ্যমকে জানান, বিশ্বে আজ করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে। বার বার অনুরোধ ও নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেকে নির্দেশনা না মেনে চলাফেরা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখছে। এতে সংক্রমণের ঝুকি দিন দিন বেড়ে চলেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে সাথে নিয়ে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত যৌথ টহল দেওয়া হচ্ছে।

 

অনুদান বিষয়ে ভূমিহীন আর এক দিনমুজুর বাদামওয়ালা জানান, আমি খুব অসহায় এর মধ্য দিনযাপন করছি। এখনো পর্যন্ত কোন অনুদান সহায়তা পায় নি। যদি কোন বিত্তশালী ও সরকারের পক্ষ থেকে সাহায্য সহযোগীতা করেন তাহলে বেচে থাকতে পারবো। আর এক ভূমিহীন চা বিক্রেতা জানালেন, করোনা পরিস্থিতির কারনে কর্মহীন হয়ে এখন ঘরে বসে আছে। আপনারা যদি অনুদান সহযোগীতা করেন, তাহলে বেচে থাকতে পারবো।