Sharing is caring!

জাহিদুল ইসলা, গাইবান্ধাঃ
গ্রামগঞ্জ হয়ে তাল এখন শহরের অলিগলিতে মেলে। তালের শাঁস খাওয়ার এখনই সময়। অনেক ফল যখন ফরমালিনের বিষে নীল, অন্যদিকে তালের শাঁসে ফরমালিনের ছোঁয়া লাগেনি। নিশ্চিত করে বলছি কারণ, দীর্ঘদিন তাল রেখে দিলেও নষ্ট হয় না।
তীব্র গরমে তালের কাঁচা শাঁস প্রতিনিয়ত বাড়ছে গ্রাম বা শহরে ব্যাপক চাহিদা। যা প্রতি পিচ শাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা ও ১০ টাকায়। আর ১টি তাল বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা। প্রচন্ড গরমে স্বস্তি পেতে কাঁচা তালের কোনো জুড়ি নেই। তালের শাঁস খাওয়ার জন্য ছোট থেকে বৃদ্ধ বয়সের মানুষ তালের দোকানে উপচে পড়া ভিড় জমাচ্ছেন। দাম কম থাকায় অনেক পুরো তালের বিচি খাচ্ছে। আবার কেউ কেউ বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য।
সরেজমিনে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় বিভিন্ন হাট-বাজার, স্কুল-কলেজেরর সামনে ও সড়কের বিভিন্ন জায়গায় এ কাঁচা তালেরর শাঁস বিক্রির চিত্র দেখা যায়। পলাশবাড়ী চৌরাস্তার ডাক বাংলা মাকের্টের সামনে রহরহ বিক্রি হচ্ছে তালের শাঁস।
রাব্বীর মোড়, কালিবাড়ী গুড় হাটিতে ও বাজারের পাশে কাঁচা তাল বিক্রেতা সিডু বলেন, কাঁচা তালের শাঁস বিক্রি করার এখন মৌসুম চলছে। এ তালের শাঁস বেশী ভাগই স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা কিনে। গরমে কাঁচা তালের শাঁস বিক্রিও ব্যাপক চাহিদা বাড়ছে।
বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১টা কাঁচা তালে ২ থেকে ৩ টা শাঁস থাকে। প্রতি পিচ শাঁস বিক্রি করেন ৫ থেকে ১০ টাকা। প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত তালের শাঁস বিক্রি করে থাকেন। তাল কেনা, পরিবহন খরচ ও ১ জন শ্রমিক খরচ বাবদ প্রতিদিন ৬ থেকে ৮’শ টাকা লাভ থাকে।
তালের শাঁস ক্রেতা সাংবাদিক হামিদুল জানান, পাঁকা তালের চেয়ে কাঁচা তালের শাঁস খেতে অনেক স্বসাদু। প্রতিদিন ২ থেকে ৪ টা করে খাওয়া হয়।
কথা হয় চৌমাথার আরেক কাঁচা তাল ব্যবসায়ী জাভেদের সাথে। তিনি জানান, তীব্র গরমে মানুষের কাছে কাঁচা তালের শাঁস ব্যাপক চাহিদা থাকায় তাদের বিক্রির পরিমাণও বাড়ছে। অন্য দিকে তাল গাছ মালিকরাও লাভবান হচ্ছে।
ঘোড়াঘাট রোডে কাঁচা তালের শাঁস ক্রেতা আমিনুল ইসলাম জানান, কাঁচা তালের শাঁস গরমে অনেক স্বস্তিদায়ক। কয়েকটা তালের শাঁস খেলে গরমের তীব্রতাও কমে যায়। তাই প্রতিদিন কমবেশী তালের শাঁস খাওয়া হয়।
সদর ইউনিয়ানের হিজল গাড়ী গ্রামের তাল গাছ মালিক সবুর জানান, পাকা তাল মানুষ তেমন কিনতে চায় না ও খেতেও চায় না। হাট বাজারে বিক্রি করার জন্য নিলে তালে আবার ফেরত আনতে হয়। অনেক সময় গাছে পেকেই নষ্ট হয়ে যায়। তাই কাঁচা তাল বিক্রি করছি। এতে করে পাঁকা তালের চেয়ে দ্বিগুণ টাকায় বিক্রি করা যায় পাইকারি তাল ব্যবসায়ীদের কাছে।
তিনি আরো জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর তালে বেশী এসেছে গাছে। দামও অনেক ভাল। দুইটি গাছের প্রায় ৫ হাজার টাকার মত তাল বিক্রি করতে পারছি। কিছু তাল গাছে রেখে দেয়া হয়েছে। তা পাকার পর বীজরোপন করা হবে তাল গাছ বৃদ্ধির জন্য।