Sharing is caring!

বিশেষ প্রতিনিধি :
ভোলা লক্ষ্মীপুর- নৌ-রুটের ফেরী কনকচাপা নষ্ট থাকায় গত ১৫ দিন ধরে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এছাড়া বর্তমানে ফেরী সঙ্কটের কারণে মজুচৌধুরীর হাট ফেরী ঘাট এলাকায় শতাধিক পণ্যবাহী গাড়ি আটকা পড়ে আছে। এতে পরিবহন শ্রমিকরাও আর্থিক ও মানসিক কষ্টে রয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যাতায়াতের কথা চিন্তা করে ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চ ঘাটটি চালু করে। ওই সময় কামিনী, কিষানী ও কস্তুরী নামের তিনটি ফেরী এ নৌপথে চলাচল করতো। এরপর বিআইডব্লিওটিএ কামিনি ও কস্তুরি নামের ২টি ফেরী প্রত্যাহর করে নেয়। বর্তমানে কনক চাপা, কিষানী ও কলমীলতা নামে তিনটি ফেরী এ রুটে চলাচল করছে। কিন্তু ফেরী কনক চাপার ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় গত ১৫দিন ধরে ঘাটে পড়ে আছে।
২৫শে জুন কনকচাপাটি সচল হলেও ২৬শে জুন বর্তমানে কলমিলতা নামে ফেরীটি বিকল হয়ে যায়। ফেরী বন্ধ থাকায় বর্তমানে ওই নৌ-রুটে দেখা দিয়েছে ফেরী সঙ্কট। এতে যাত্রী ও চালকরা চরম বিপাকে পড়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, ফেরীতে উঠতে সিরিয়াল নিতে যানবাহন চালককে দিতে হয় দ্বিগুণ অর্থ। টাকা না দিলে দিনের পর দিন পণ্যবাহী যানবাহন ঘাটে আটকে থাকতে হয় বলে অভিযোগ করেন চালকরা। ফলে ঘাটের দু’পাড়ে আটকা পড়েছে শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা।
অপরদিকে প্রায়ই ডুবোচরে আটকে পড়ে ফেরী। এতে করে ঘন্টার পর ঘন্টা ডুবোচরে আটকে থাকে ফেরী। ফেরী সঙ্কটের কারণে যথা সময়ে গন্তব্য পৌঁছতে পারছে না যানবাহন। ফলে মানুষ যথা সময়ে তার গন্তব্যে পৌঁছতে পারছেন না।
ভোলাগ্রামী ট্রাক চালক এরশাদ উল্যাহ জানান, তিনি চট্টগাম থেকে পণ্য নিয়ে ভোলার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন। গত ২দিন ধরে তিনি ঘাটে সিরিয়াল পাচ্ছেনা না। এরপরও বিকল হওয়ায় ফেরীটি মেরামত করা হয়নি। দিনের পর দিন ঘাটে আটকে থাকতে হয়। কবে বিকল হওয়ায় ফেরীটি চালু হবে তাও জানা নেই কারও। প্রতিদিন এ নৌ-রুটের কয়েক জায়গায় ডুবোচর জেগে উঠায় ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকে ফেরী। এ কারণে ট্রাকে কাঁচামাল ও বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া যানবাহনের শ্রমিকরা অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছে। সঠিক সময়ে গন্তব্যে না পৌঁছায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয় বলে অভিযোগ করেন চালকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন এ প্রতিবেদককে জানান, লক্ষ্মীপুর-ভোলা এ নৌ-রুটে গাড়ি প্রতি সরকার নির্ধারিত ভাড়া ২ হাজার ৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। অথচ প্রতি যানবাহন থেকে আদায় করছে ৩ হাজার ৪০০ টাকা। এছাড়া ফেরীতে উঠানোর জন্য যে সিরিয়াল সেটাও মানা হয় না। টাকা দিলে সিরিয়াল পাওয়া যায়। টাকা না দিলে দিনের পর দিন ঘাটে যানবাহন নিয়ে বসে থাকতে হয়। বিআইডাব্লিউটিসির কর্মকর্তা কর্মচারীদের অত্যাচারে অতিষ্ট যানবাহন মালিক ও চালকরা।
বিআইডাব্লিউটিসি মজু চৌধুরীর হাট ফেরীঘাট এর সহকারী প্রকৌশলী আবদুল মালেক জানান, ফেরী কনকচাপার ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় বর্তমানে ফেরীটি বন্ধ রয়েছে। এটি মেরামত করা হলে দুর্ভোগ থাকবে না।
বিআইডাব্লিউটিসি, মজুচৌধুরীরহাট ফেরীঘাট এর সহকারি পরিচালক মো. কাউছার যানবাহন ও দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানান, এ বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করি। সিরিয়াল বা সরকার নির্ধারিত ভাড়া ছাড়া কোন বেশি অর্থ নেয়া হচ্ছে না ঘাটে।