৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

চাটখিলে তাবিজের ব্যবসা জমজমাট – প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ

প্রকাশিত আগস্ট ৯, ২০২৩
চাটখিলে তাবিজের ব্যবসা জমজমাট – প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ

Sharing is caring!

মোজাম্মেল হক লিটন, নোয়াখালী প্রতিনিধি:চাটখিলে তাবিজ- তুমারের ব্যবসা জমজমাট আকার ধারণ করেছে। তাবিজ – তুমারের এই অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে লাখ- লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দিনের পর দিন গাড়ি-বাড়ির মালিক হচ্ছে এসব তাবিজ ব্যবসায়ীরা। এতে করে সমাজের সাধারণ মানুষেরা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে। এই অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করা কিংবা মানুষকে প্রতারণা থেকে রক্ষা করার কেউ নেই। এই তাবিজ ব্যবসায়ীদের দাপটে আলেম সমাজের লোকজন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাটখিল আলিয়া মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মাওলানা আবুল কালাম (কালাম হুজুর) চাটখিল পৌর শহরে বড় মসজিদের পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে, চাটখিল পৌর শহরের জামেয়া ওসমানিয়া মাদ্রাসার মহতামিম মাওলানা ইউসুফ (ইউসুফ হুজুর) মাদ্রাসার অফিস কক্ষে, চাটখিল পৌর শহরের খোকন ভিডিও গলিতে মাওলানা বেলায়েত হোসেন, হাটপুকুরিয়া ঘাটলাবাগ ইউনিয়নের বড় বাড়ির মসজিদের খতিব মো: আব্দুল্লাহ (লাদেন হুজুর) এরা সহ আরো কয়েকজন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ তাবিজ- তুমারের ব্যবসার মাধ্যমে সাধারণ নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে লাখ – লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে কেউ কেউ সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অবৈধ তাবিজ ব্যবসায় চালাচ্ছে।

ইসলাম ধর্মে ঝাড়ু ফুঁ, তেল ও পানি পড়া জায়েজ আছে। তবে তাবিজ – তুমার দেওয়া ও তাবিজ দিয়ে টাকা রোজগার করা সম্পূর্ণ হারাম। এমনকি তাবিজ – তুমারে বিশ্বাস করাও শিরক। কিন্তু এরা আলেম হয়েও টাকার লোভে এই নাজায়েজ কাজ করে সমাজে ফেতনা সৃষ্টি করেছে। এদের খপ্পরে পড়ে অনেকে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে তবে মানসম্মানের ভয়ে তা প্রকাশ করতে চায় না। কিছুদিন আগে এক ভুক্তভোগী নারী এক তাবিজ হুজুর থেকে তাবিজ নিয়ে উপকার না পেয়ে টাকা ফেরত নিতে আসলে ঐ তাবিজ হুজুর তাকে অপমান করে তার আস্তানা থেকে বের করে দেয়। তখন ঐ ভুক্তভোগী চাটখিল প্রেসক্লাবে এসে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তার অভিযোগ তুলে ধরেন। সাংবাদিকরা ঐ তাবিজ হুজুরকে ডেকে এনে মহিলার টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।

এই তাবিজ – তুমার সম্পর্কে প্রখ্যাত আলেম মাওলানা মনজুরুল আলম, মাওলানা মহিউদ্দিন হাসান, মাওলানা হাবিব উল্লাহ মেজবাহ, মাওলানা আশেকে এলাহী, মাওলানা মফিজুল ইসলাম, মাওলানা সাইফ উল্লাহ সহ আরো অনেক আলেমের কাছে জানতে চাইলে তারা সবাই বলেন, ইসলাম ধর্মে ঝাঁড়-ফুঁ তেল ও পানি পড়া দেওয়া জায়েজ আছে। তবে তাবিজ দেওয়া ও তাবিজ দিয়ে টাকা নেওয়া হারাম। যারা এই অবৈধ কাজ চালিয়ে তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে মহিলাদের কে তাবিজ তুমারের প্রতি আকৃষ্ট করে শিরকের দিকে নিয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা একান্ত প্রয়োজন।

অভিযুক্ত কালাম হুজুর ও ইউসুফ হুজুর এর সঙ্গে এব্যাপরে যোগাযোগ করলে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। চাটখিলের আলেম সমাজ সহ সচেতন মহল এসব তাবিজ হুজুরদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্ট সকল সু – দৃষ্টি কামনা করছেন।