১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

ঈদে পর্যটক বরণে প্রস্তুত গোয়াইনঘাট

admin
প্রকাশিত জুন ৩, ২০১৯
ঈদে পর্যটক বরণে প্রস্তুত গোয়াইনঘাট

Sharing is caring!

অভিযোগ ডেস্ক :

প্রকৃতি কন্যা জাফলং, জল পাথরের বিছনাকান্দি, জলারবন রাতারগুল, জলপ্রপাতের পান্তুমাই, মায়াবতী ঝর্ণা জাফলং ও এশিয়া মহাদেশে সমতল ভূমিতে বৃহত্তম জাফলং চা-বাগান সবকয়টি পর্যটন কেন্দ্র সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাটে অবস্থিত।

প্রকৃতিগত ভাবে সৃষ্ট এসব পর্যটনকেন্দ্রের রুপ ও লাবণ্য যেন মহান সৃষ্টিকর্তা নিজ হাতে ঢেলে সাজিয়েছেন। এই পর্যটন কেন্দ্রগুলি ভ্রমণ করে বিমোহিত হন দেশ-বিদেশি লাখো-লাখো পর্যটক।

বর্তমানে সিলেটের পর্যটন বলতে দেশবাসী গোয়াইনঘাট উপজেলাকেই বেঁছে নিয়েছেন। তাইতো চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ছুটিতে শুধুমাত্র গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র গুলিতে প্রায় ৫ লাখ পর্যটকের সমাগম হয়েছিল বলে এলাকাবাসী দাবি করেছিলেন।

যোগাযোগ ব্যবস্থা মোটামুটি ভালো থাকায় ওই সময় সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক, বঙ্গবীর-হাদারপার সড়ক, সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক এবং ধোপাগুল-হরিপুর সড়কে পর্যটকবাহী কয়েক হাজার গাড়ি আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছিল। সাড়া উপজেলার পর্যটন এলাকাসহ সিংহভাগ এলাকায় সুপেয় পানির অভাব সৃষ্টি হয়েছিল।

অপরদিকে সিলেটের সবকয়টি আবাসিক হোটেলে পর্যটকেরা গাদাগাদি করে অবস্থানের পরেও জায়গা না পেয়ে হোটেলের বারান্দায়, আত্মীয় স্বজনের বাসায় এমনকি হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.)’র মাজারেও রাত্রি যাপন করতে হয়েছিল অনেককেই।

গোয়াইনঘাটের পর্যটন কেন্দ্র গুলিতে নতুন করে পর্যটকদের এতো ভিড়ের পিছনে রয়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলায় কর্মরত সংবাদকর্মীদের বিশেষ অবদান। এছাড়াও গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত কুমার পালের উদ্যোগে প্রকৃতি কন্যা জাফলংয়ে পর্যটকদের আগ্রহী করে তুলতে নির্মিত দৃষ্টি নন্দন সিড়ি। দৃষ্টি নন্দন ওই সিড়ি নির্মাণই দেশ-বিদেশি পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডেকে নিয়ে আসছে।

বর্তমানে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট, বঙ্গবীর-হাদারপার, সিলেট-তামাবিল মহাসড়কসহ সবকয়টি সড়কের অবস্থা পুর্ব থেকে অনেকটা ভালো হওয়ায় সমাগত পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ৬/৭ লাখ পর্যটকের সমাগম আশা করছেন স্থানীয়রা। এ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে পর্যটকদের বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় প্রশাসন। পুলিশ, বিজিবি, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং আনসার বাহিনীর সমন্বয়ে প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রের জন্য আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে।

বিশেষ করে সাতার না জানা লোকদের পানিতে না নামতে উপজেলা প্রশাসনসহ সংলিষ্ট দফতরের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে সতর্কতা মূলক সাইনবোর্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার দেয়া হয়েছে। বিশেষ প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার জন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে কাজ করবে একটি মেডিকেল টিম।

জাফলং : সিলেট শহরের ধোপাদীঘির পাড় ওসমানী শিশু উদ্যানের সামনে থেকে সিএনজি অটোরিকশা, বাস, লেগুনায় সরাসরি জাফলংয়ের বল্লাঘাট পিকনিক সেন্টারে যাওয়া যাবে।

রাতারগুল : সিলেট শহরের আম্বরখানা থেকে অটোরিকশা যোগে সরাসরি রাতারগুল গ্রামে পিকনিক সেন্টারে যাওয়া যাবে।

বিছনাকান্দি : সিলেট শহরের আম্বরখানা হতে অটোরিকশা ও লেগুনায় পীরের বাজার অথবা হাদারপার যেতে হবে। পীরের বাজার অথবা হাদারপার হতে নৌকা যোগে বিছনাকান্দি যেতে হবে।

পান্তুমাই : সিলেট আম্বরখানা হতে অটোরিকশা যোগে গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের পাশ দিয়ে পান্তুমাই যেতে হবে।

এছাড়া প্রাইভেট গাড়ী সাথে থাকলে গোয়াইনঘাটের সবকয়টি পর্যটন কেন্দ্র এক দিনে ঘুরে দেখা সম্ভব। গোয়াইনঘাট উপজেলায় অভ্যন্তরীণ বেশকটি সড়ক ও জাফলং সেতু নির্মিত হওয়ায় তা সহজ হয়েছে।

এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন- পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে দেশ ও বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখোরিত হবে গোয়াইনঘাটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। পর্যটকদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা প্রদানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন- প্রকৃতি কন্যা জাফলং ও জল পাথরের বিছনাকান্দিতে সাতার না জানার কারণে অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। সেক্ষেত্রে সাতার জানা না থাকলে পানিতে না নামতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

এছাড়া পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে উপজেলা প্রশাসনের নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দেয়া সতর্কতা বজায় রেখে আনন্দ উপভোগ করতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।