১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৬ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার-২

admin
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার-২

Sharing is caring!

 

ফয়সাল আজম অপু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ৮ বছরের এক শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টা ও তা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি মাদ্রাসা শিক্ষক ও এর পরিচালকের বিরুদ্ধে। আর অভিযুক্ত ব্যাক্তির সে ভাই প্রভাবশালী হওয়ায় এবং ভুক্তোভোগী শিশু কন্যার পরিবারটি দরীদ্র হওয়ায় বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সে পরিবারটিকে চাপ প্রয়োগ ও অর্থের প্রলোভনেরও অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত ব্যাক্তি শিবগঞ্জ উপজেলার দুলর্ভপুর ইউনিয়নের কালুপুর গ্রামের মৃত মফিজউদ্দিনের ছেলে ও কালুপুর দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ হোসাইন(২৮)এবং সহায়তাকারী অভিযুক্তের বড় ভাই মাদ্রাসা পরিচালক ও একটি হজ্জ কাফেলার মালিক মোঃ শরিফুল ইসলাম।
ঘটনাটি গত ২১ সেপ্টেম্বর সকালে মাদ্রাসা চলাকালীন সময় হলেও পুলিশের সহায়তায় এ ঘটনায় ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছে শিশুটির পিতা। এ ঘটনায় শিবগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষক ও তার বড় ভাই কে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার আদালতে প্রেরন করে।

শিবগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত মামলা সূত্রে ও শিশুটির পিতা জানান, বাড়ির পাশের গ্রামের দারুল উলুম মাদ্রাসায় তার ৮ বছরের শিশুকন্যা কে ভর্তির পর থেকেই ঐ মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ হোসাইন মাঝে মধ্যেই তার মেয়েকে আদর করে কোলে নিত। সম্প্রতি তার মেয়েকে ৩-৪ বার ক্লাশের পাশের একটি ঘরে নিয়ে জামা কাপড় খুলে গোপন অঙ্গে স্পর্শ করত। এতে মেয়েটি বাড়ি গিয়ে আর মাদ্রাসায় না পড়ার বাইনা করলেও তাতে তারা কর্ণপাত করত না। গত ২১ সেপ্টেম্বর একইভাবে তার মেয়েকে একটি ঘরে নিয়ে ধর্ষনের চেষ্টা করলে মেয়েটি চিৎকার করলে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।

এ সময় মাদ্রাসার পাশেই অভিযুক্ত শিক্ষকের বাড়ি হওয়ায় তার বড় ভাই শরিফুল ইসলাম বিষয়টি মিমাংসা করার কথা বলে তার সন্তানকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। পরে বিষয়টি তার মেয়ের কাছ থেকে জেনে এ ঘটনার বিচার চাইতে গেলে তাদেরকে থানায় মামলা দায়ের না করা ও টাকার বিনিময়ে মিমাংসা করার জন্য চাপ দেয়। এদিকে বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হলে শিশুটির পিতা তার পরিবার নিয়ে শিশুটির নানীর বাড়ি চলে গেলে সেখানেও অভিযুক্তের ভাই শরিফুল গিয়ে মিমাংসার জন্য চাপ দেয়। বিষয়টি পুলিশ কে জানানো হলে পুলিশ সোমবার রাতে অভিযুক্ত ব্যাক্তির ভাইকে ও পরে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে নিয়ে আসে।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে শিশুটির সহপাঠিরা বিচার দাবী করেছে এবং মাদ্রাসায় যেতে ভয় পাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক ক্ষোভের সাথে জানান, সন্তান তুল্য শিশুদের সাথে শিক্ষকরা এ ধরনের ব্যবহার করলে তারা তাদের সন্তানদের স্কুল মাদ্রাসায় কিভাবে পাঠাবেন। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তিও দাবী করেন তারা।
এদিকে এ ঘটনায় পুলিশের সহায়তায় শিশুটির পিতা সোমবার গভীর রাতে আটককৃত ২ ভাইকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ মঙ্গলবার দুপুরে আটকৃতদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরন করে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসাইন জানান, বিষয়টি তাদের নজরে আসার পর পুলিশ ভুক্তভোগী পরিবারটিকে নিরাপত্তা দিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে এবং পুলিশ এ মামলার সকল আাসামীকেই গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে।