২৪শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে রুবেলের কব্জিকাটার মূল হোতা ফয়েজ চেয়ারম্যান ২৪ ঘন্টার মধ্যে সহযোগী সহ গ্রেপ্তার

admin
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে রুবেলের কব্জিকাটার মূল হোতা ফয়েজ চেয়ারম্যান ২৪ ঘন্টার মধ্যে সহযোগী সহ গ্রেপ্তার

Sharing is caring!

 

ফয়সাল আজম অপু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে তুলে নিয়ে গিয়ে যুবকের কব্জি কেটে নেয়ার ঘটনায় উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে তার সহযোগি তারেক আহমেদকেও গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯ টার দিকে সদর উপজেলার আমনুরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টি এম মোজাহিদুল ইসলাম (বিপিএম, পিপিএম)।
তিনি জানান, রুবেল হোসেনের কব্জি কেটে নেয়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত চেয়ারম্যানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে রাতে উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমদ (৩৫) ও তার প্রধান সহযোগী তারেক আহমেদকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে দুপুরে চেয়ারম্যানের আরো দুই সহযোগি জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) ও আলাউদ্দিনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
পুলিশ সুপার টি এম মোজাহিদুল ইসলাম, আরও জানান, রাতে নওগাঁ পালিয়ে যাবার সময় সদর উপজেলার আমনুরায় পুলিশের চেক পোস্টে মূল আসামী উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমদসহ তার অপর আরেক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। রুবেলের উপর হামলার পর থেকেই পুলিশ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালাচ্ছিল। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। কব্জি হারানো রুবেল হোসেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নং ওয়ার্ডে ভর্তি আছে।
রুবেল শিবগঞ্জ উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা গ্রামের খোদা বক্সের ছেলে। বুধবার গভীর রাতে রুবেলকে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই হাতের কব্জি কেটে ফেলে ফয়েজ আহমেদের লোকজন। ফয়েজ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
দুই হাতের কব্জি হারানো রুবেল জানান, শিবগঞ্জের উজিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ফয়েজ উদ্দিনের সাথে নদীর ঘাট নিয়ে তার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে তাকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই হাতের কব্জি কেটে দিয়েছে।
রুবেলের চাচাতো ভাই ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সালাম বলেন, বুধবার রাতে রুবেল তার দুই বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি আসছিলেন। এ সময় শিবগঞ্জের উজিরপুর বেড়ি বাঁধের কাছে কয়েকজন তাদের পথ রোধ করেন এবং পাশেই চেয়ারম্যান ফয়েজের চেম্বারে গিয়ে দেখা করতে বলেন।
রুবেল বন্ধুদের নিয়ে চেম্বারে গেলে, তার দুই বন্ধুকে সেখানে আটকে রাখা হয়। আর রুবেলের মুখ ও চোখ গামছা দিয়ে বেঁধে পদ্মা নদীর বাঁধের নিচে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে নির্যাতন করে তার দুই হাতের কব্জি কেটে নেন চেয়ারম্যানের লোকজন। রাত ১টার দিকে খবর পেয়ে স্বজনরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আব্দুস সালাম আরো জানান, নিউ পদ্মা ফেরি ঘাট নিয়ে চেয়ারম্যান ফয়েজের সঙ্গে তাদের বিরোধ রয়েছে। এমপি ও তার ভাইয়ের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ মিলে মিশে ঘাটটি চালাচ্ছিল। কিন্তু কিছু দিন ধরে ফয়েজ ফেরি ঘাটটি পুরো নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে চাচ্ছিলেন। এর জের ধরেই তার লোকজন রুবেলের দুই হাতের কব্জি কেটে নিয়েছেন।