১৯শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

এক জয়ে অনেক পাওয়া বাংলাদেশের

admin
প্রকাশিত মার্চ ২, ২০২০
এক জয়ে অনেক পাওয়া বাংলাদেশের

Sharing is caring!

Manual2 Ad Code
বাংলাদেশ খেলোয়াড়দের জয়োল্লাস ● সংগৃহীত

 

Manual8 Ad Code

মনির সরকার :: এক ম্যাচেই কতকিছু। সিলেটের সবুজে ঘেরা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামটা যেন বাংলাদেশকে দিলো দু’হাত ভরে। প্রকৃতির সৌন্দর্য্যের সঙ্গে পাল্লা দিলো লিটন দাসের ব্যাটিং। যতক্ষণ খেললেন, অন্যদিকে কেউ তাকানোর সাহসই তো পাওয়ার কথা না। এমনিতে তার প্রতিভা নিয়ে সন্দেহ নেই কারও, কিন্তু তা মেলে ধরতে বেশিরভাগ সময়ই হন ব্যর্থ। 

Manual5 Ad Code

এবার আর হলেন না। সেঞ্চুরি হাঁকালেন, রিটায়ার্ড হার্ড হওয়ার আগে ১৩ চার আর ২ ছক্কায় ১০৫ বলে খেললেন ১২৬ রানের ঝকঝকে ইনিংস। তবে এই ম্যাচ যারা দেখেছেন, তারা জানেন এই পরিসংখ্যানের চেয়েও লিটনের ব্যাটিং ছিল আরও বেশি মোহাচ্ছন্ন করা। মানসিক লড়াইয়ে জিতলেন, পেরোলেন শতরান, কোনও বাজে শট ছাড়াই। এমন লিটনকেই যেন এতদিন ধরে খুঁজে ফিরছিলেন সবাই। সেঞ্চুরি তুলেও যিনি ক্ষান্ত দেননি। খেলছিলেন দুর্দান্ত সব শট, কিন্তু বিপত্তি বাধে হঠাৎই হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়ায়। ছাড়তে হয় মাঠ। তবে ততক্ষণে লিটন জানান দিয়েছেন নিজের ক্ষমতা।

লিটন যদি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বাংলাদেশের ইনিংসের, তাহলে সেটার পূর্ণতা দিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। কী দুর্দান্তই না খেললেন। তিন ছক্কায় যেন জানান দিলেন কেনো তাকে নিয়ে এত উচ্ছ্বাস চারদিকে। আর এই দু’জনের মাঝে সংযোগ সেতু হিসেবে ছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। ৪১ বলে ঠিক ৫০ রান করেই সাজঘরে গেছেন তিনি।

আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন? শেষের এক ওভার থেকেই তো এমফুফুকে হাঁকালেন তিন ছক্কা। ১৮৬ দশমিক ৬৬ স্ট্রাইক রেটে তাই তার নামের পাশে ১৫ বলে অপরাজিত ২৮ রান। ১০ ওভারে ৬৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে সাইফউদ্দিনের কাছে ধোলাই খাওয়া এমফুফুই জিম্বাবুয়ের সেরা বোলার।

Manual8 Ad Code

ব্যাটিংয়ের ফর্মটা হারাননি সাইফ। টেনে এনেছেন বোলিংয়েও। প্রত্যাবর্তন রাঙিয়েছেন ব্যাট আর বল দুইটি হাতেই। প্রথম উইকেটটাই তো নিয়েছেন। নিজের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে ফিরিয়েছেন তিনাশি কামুনহুকামুই। এরপর আরও দুই উইকেট নিয়ে তিনিই দলের সেরা বোলার। ৭ ওভারে ২২ রান দিয়ে তিন উইকেট।

তারপর দ্বিতীয় সফল বোলার কে? মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। মাঠের বাইরে যে ঝড় বইছে, তা তাকে দেখে আঁচ করা দায়। এমনই তো হওয়ার কথা ছিল, খেলোয়াড় হিসেবেই যে সিলেটে পাড়ি জমিয়েছেন। কিন্তু তা আর হলো কই! অবসর অবসর শুনতে শুনতে রীতিমতো খেপেই গেছেন ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে।

Manual3 Ad Code

তবে নিজের মূল কাজটা ভুলেননি। ৬ ওভার ১ বল করে রানটা একটু বেশি দিয়েছেন, তবে পেয়েছেন দুই উইকেট। অধিনায়ক হিসেবে শততম উইকেটও পেয়েছেন তাতে, স্বীকৃত ক্রিকেটে তার উইকেট সংখ্যা সাতশও পূর্ণ হয়েছে। এছাড়া মেহেদি হাসান মিরাজ ২টি আর মুস্তাফিজুর রহমান ও তাইজুল ইসলাম পেয়েছেন একটি করে উইকেট। তাতেই গড়া গেছে ইতিহাস।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ডটা আগে ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, ২০১৮ সালে, ১৬৩ রানে। এখন সেটা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০২০ সালে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৬৯ রানে। লিটন দাসের মনোমুগ্ধকর সেঞ্চুরি, সাইফউদ্দিনের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন কিংবা পাঁচ ম্যাচ পর মাশরাফীর উইকেট। এক জয়ে এতকিছু পেয়ে খানিক স্বস্তি খুঁজেই তো পেতে পারে বাংলাদেশ।