১২ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

‘ক্যাসিনো খালেদ’সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

admin
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
‘ক্যাসিনো খালেদ’সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

Sharing is caring!

Manual2 Ad Code
ক্যাসিনো কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া- ফাইল ফটো

 

Manual1 Ad Code

 

অভিযোগ ডেস্ক : দেশের আলোচিত ক্যাসিনো কাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও তার দুই ভাইসহ মোট ৬ জন আসামির বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছে গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইডি)।

 

 

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে জানান, খালেদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক কারবার, সংঘবদ্ধভাবে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও ক্যাসিনো ব্যবসা থেকে অবৈধ অর্থ উপর্জানের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই আসামি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াসহ এই ৬ জনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করা হয়েছে।

 

 

Manual7 Ad Code

এ মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা হলেন— খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, মাসুদ মাহমুদ ভূঁইয়া, হাসান মাহমুদ ভূঁইয়া, হারুন রশিদ, শাহাদৎ হোসেন উজ্জ্বল ও মোহাম্মদ উল্ল্যাহ খান।

 

 

তদন্তকালে আসামি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিদেশ ভ্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, বহুবার বিদেশ ভ্রমন করলেও তার পাসপোর্টে কোনও বিদেশি মুদ্রা এন্ডোর্সমেন্টের কোনো তথ্য সংযুক্ত নেই। তিনি বিদেশে যাওয়ার সময় নগদ বিদেশি মুদ্রা পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যেতেন।

 

 

আসামি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার পাসপোর্ট নম্বর ‘বিএম-০২৮৯২৮১’-এর ৩১ পৃষ্ঠায় মালয়েশিয়ার ভিসা নম্বর-‘পিই০৫১১১৬৪’ লেখা আছে। যার ইস্যুর তারিখ ২০১৮ সালের ৪ মে উল্লেখ আছে। মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা আছে ২০২১ সালের  ৩ মে।

Manual8 Ad Code

 

এছাড়া ‘সেকেন্ড হোম ভিসা’ নামে পরিচিত তার ‘এমওআইএস এমওয়াই-২ হোম’ ভিসাটি নেয়ার শর্ত সাপেক্ষে, মালয়েশিয়ার আরএইচবি ব্যাংকে ৩ লাখ রিঙ্গিত এফডিআর করা রয়েছে বলে উল্লেখ পাওয়া যায়। যা নিয়ম বহির্ভূতভাবে তিনি মালয়েশিয়ায় পাচার করেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর সঙ্গে আসামির কাছ থেকে জব্দ করা বিদেশি ব্যাংকের ডেবিট কার্ডের মধ্যে আরএইচবি ব্যাংকের ডেবিট কার্ডও রয়েছে বলেও জানা যায়।

 

 

সিআইডির অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, সিঙ্গাপুর সিটির জুরাং ইস্ট এলাকায় মেসার্স অর্পন ট্রেডার্স প্রা. লি. নামে খালেদের একটি কোম্পানি আছে। এই কোম্পানির মূলধনও বেআইনিভাবে হুন্ডির মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে পাচারকৃত।

 

খালেদ ও তার কোম্পানির নামে ব্যাংক হিসাব থাকার প্রমাণ হিসেবে ইউওবি ব্যাংকের ডেবিট কার্ডও জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া, তার নামে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্টে ২০ লাখ টাকা সমপরিমাণের থাই বাথ জমা থাকার তথ্যও জানা গেছে। আসামির কাছ থেকে একই ব্যাংকের আরও দুটি ডেবিট কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। সহযোগী আসামি মোহাম্মদ উল্লাহ তার নির্দেশে বিদেশি মুদ্রা কেনেন। মোহাম্মদ উল্লাহ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

 

 

Manual7 Ad Code

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আসামি মোহাম্মদ উল্লাহ ২০১২ সাল থেকে মালিকানাধীন ভূঁইয়া অ্যান্ড ভূঁইয়া ডেভেলপার লি., মেসার্স অর্পন প্রোপার্টিজ ও অর্ক বিল্ডার্স নামে তিনটি ফার্মের জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। যার প্রতিটির মালিকানা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার নামে। এছাড়া খালেদের নির্দেশে তার উপার্জিত অবৈধ অর্থ গ্রহণ করে খালেদের ভাই মাসুদ মাহমুদ ভূঁইয়ায় সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাংকে জমা দেয়ার দায়িত্বও ছিল মোহাম্মদ উল্লাহর। যার প্রেক্ষিতে আসামি মোহাম্মদ উল্লাহর বিরুদ্ধে খালেদের অপরাধের আয় গ্রহণ, ব্যাংকে জমা এবং পাচারের জন্য অবৈধভাবে বিদেশি মুদ্রা কেনার মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ে সহায়তা করার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে খালেদকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

 

প্রসঙ্গত, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার নামে বর্তমানে পাঁচটি মামলা রয়েছে। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং অভিযোগ আরও অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বৈদেশিক মুদ্রা রাখার অপরাধে ‘ফরেন একচেঞ্জ রেগুলেশনস আ্যাক্ট-১৯৪৭’-এ মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

 

গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এরপর র‌্যাব বাদী হয়ে খালেদের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিং আইনে গুলশান ও মতিঝিল থানায় চারটি মামলা দায়ের করে।

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code