৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে মহাশোভাযাত্রা

প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৩
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে মহাশোভাযাত্রা

Sharing is caring!

পলাশ কান্তি নাথঃ
সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের আরাধ্য ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী। এদিন দেশের হিন্দু সম্প্রদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে জন্মাষ্টমী পালন করেন।হিন্দু পুরান মতে, ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টম তিথিতে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ জন্ম গ্রহণ করেন। সনাতন ধর্মালম্বীদের বিশ্বাস পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। তাদের আরো বিশ্বাস, দুষ্টের দমন করতে এভাবেই যুগে যুগে ভগবান মানুষের মাঝে নেমে আসেন এবং সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেন।এ উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও শ্রী কৃষ্ণেররথ,রাধা-কৃষ্ণের যুগল মূর্তি, কংসের জেলখানাসহ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জীবনের নানা অংশের আদলে সেজে শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন ভক্তরা।৬ সেপ্টেম্বর বুধবার  সকালে নগরের জেএম সেন হল প্রাঙ্গণ থেকে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা বের হয়। এতে অংশ নিতে নগর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা থেকে ট্রাক, মিনিট্রাক, পিকআপ, লরি নিয়ে ভক্তরা আন্দরকিল্লা, মোমিন রোডসহ আশপাশের এলাকায় জড়ো হন। দেখতে দেখতে জনসমুদ্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা। অনেক শিশুকে দেখা যায় বাবা-মায়ের কাঁধে-কোলে চড়ে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে।আন্দরকিল্লা, লালদীঘির পাড়, সিনেমা প্যালেস, বোস ব্রাদার্স, ডিসি হিল, মোমিন রোড ঘুরে শোভাযাত্রাটি আবার জেএম সেন হল উৎসব প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।
জন্মাষ্টমী মহাশোভাযাত্রায় প্রধান অতিথি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ছেন। ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের অনুসারী হলেও  আমরা বাঙালি। আমাদের চিন্তা হতে হবে আমরা মানুষ। বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ হবে।আরো অতিথি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, আওয়ামী লীগ নেতা শফর আলী, দেবাশীষ পালিত, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব প্রমুখ।নোমান আল মাহমুদ বলেন, আজ আমাদের শপথ হোক সত্য ও ন্যায়ের পথে চলব। সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ব।পরিষদের সভাপতি সুকুমার চৌধুরী বলেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথিতে জন্মাষ্টমী উৎসব। এ উপলক্ষে বিভিন্ন জেলায় বস্ত্র বিতরণ, রক্তদান, অনাথ-দুস্থদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, গীতা পাঠ, সন্ধ্যারতি, জন্মাষ্টমী পূজা-ভোগ, দেশ জাতির কল্যাণ এবং করোনা, ডেঙ্গু, যুদ্ধ, অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য সমবেত প্রার্থনা করা হবে। জন্মাষ্টমী উৎসব উদযাপন পরিষদ ধর্ম ও কর্মের সমন্বয়ে গভীরভাবে বিশ্বাসী। আমরা মনে করি, সহিষ্ণু ও অসাম্প্রদায়িক ধর্মীয় চেতনা এবং চিন্তা দেশের উন্নয়ন ও সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারে। গণতান্ত্রিক পরিবেশের মূল কথা হলো অহিংস মনোভাব ও সহিষ্ণুতা।তিনি সনাতনীদের জন্য ৬৪ জেলায় মডেল মন্দির নির্মাণ, বেদখল হওয়া মঠ, মন্দির, দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধার ও সংরক্ষণে আইন প্রণয়ন, সাম্প্রদায়িক হামলায় বিধ্বস্ত মন্দির, বাড়ি সরকারি উদ্যোগে পুননির্মাণ এবং দুর্গোৎসবে চারদিনের সরকারি ছুটির দাবি জানান।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, চসিক কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, শৈবাল দাশ সুমন, রুমকি সেন গুপ্ত, শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তপন কান্তি দাশ, চন্দন তালুকদার, বিমল কান্তি দে, সাধন কর, নগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ ভট্টাচার্য, তপন কান্তি দাশ, প্রকৌশলী আশুতোষ সরকার, ডা. বিধান মিত্র, সুমন মজুমদার, শ্রীপ্রকাশ দাস অসিত, তাপস কুমার নন্দী, সুমন দেবনাথ, এস প্রকাশ পাল, রতন রায়, শঙ্কর সেনগুপ্ত, পণ্ডিত গদাধর দাস ব্রহ্মচারী প্রমুখ। ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ বৃহস্পতিবার  সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করার কথা রয়েছে শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের নেতাদের।