Sharing is caring!
সিলেট বিভাগীয় ব্যুরো -ফয়ছল কাদিরঃ-
একে’তো সরকারী চাকুরীজীবি।আর তা যদি হয় একটা কর্মমুখর এলাকায়, ব্যস্ততম শহরের,মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্টে,তবে বুঝতে অসুবিধে নেই কতটা পরিশ্রম আর ক্লান্তিতে ডিউটির ৮ঘন্টা সময় কাটাতে হয়।তাই কি শেষ- অফিশিয়াল সকল কাজ কর্ম শেষ করে নিজ অধীনস্থ সকল কর্মচারীর সুখ দুঃখ ভাগ করে রুমে ফিরতে হয়।এককথায় ব্যস্তময় জীবনের সকল ব্যস্ততা কাটিয়ে নিজের মনের খোরাক মেটানো একেবারেই অসম্ভব ।
আর এই অসম্ভব কে সফল করেছেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। মনের খোরাক বলতে লেখালেখি। নানা অস্থিরতার মাঝেও স্বস্থির মনে লিখে চলেছেন অনবরত। অবাক হওয়ার বিষয় হলো সেই লেখাগুলো যদি হয় মুক্তিযুদ্ধ কিংবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেন্দ্রিক তবে একটু আশ্চর্য হওয়ার কথা।কেননা অনেক ডকুমেন্টস প্রয়োজন।লেখা হতে হবে সচ্ছ ও গুণগত। আর ঐ গুনী লেখক তাই করছেন।শত বাঁধা অতিক্রম করে নিজের আপন ভূবণে জায়গা করে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
লেখক শরিফুল হাসান শিশির- ফেইসবুকে তিনি স্বপ্নিল শিশির নামে পরিচিত।তাঁর জন্ম ১৯৮৯ সালের ২২শে নভেম্বর চট্টগ্রামে।পিতা শহিদুল্লাহ, পেশায় একজন সরকারী চাকুরীজীবি। মা গৃহিণী। মা ও বাবার তিন পুত্র সন্তানের মধ্যে শরিফুল হাসান শিশির প্রথম সন্তান।শিশির ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় মেধাবী। পাঠ্যবইয়ের পড়াশোনার পাশাপাশি টুকিটাকি লেখালেখি করতেন।ক্লাসে সবসময়ই কৃতিত্বের সাথে উত্তির্ন হয়েছেন।বাবা সরকারী চাকুরীর সুবাধে শিশিরের চট্টগ্রামেই জন্ম। স্কুল কলেজ সহ ঐ শহরেই বড় হয়েছেন। আর লেখক হয়ে উঠেছেন পার্বত্য চট্রগ্রামের প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের সান্নিধ্যে।
শিশির ২০০৩ সালে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর গোমদন্ডির পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি ও বিজ্ঞান শাখা থেকে প্রথম বিভাগে ২০০৫ সালে চট্টগ্রামের রাউজান ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচ এস সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান শাখা থেকে প্রথম বিভাগে উত্তির্ন হয়েছেন।
এরপর ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক কোর্সে গণিত বিভাগের প্রথম ব্যাচে(২০০৫-২০০৬ সেশনে)ভর্তির সুযোগ পান।সেখানেও নিজের মেধা শক্তির সাফল্যতা ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২০০৯ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগ থেকে প্রথম বিভাগে স্নাতক পাশ করে-উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়েই মাস্টার্স কোর্সে গণিত বিভাগের প্রথম ব্যাচে(২০০৯-২০১০সেশনে) ভর্তির সুযোগ পেয়ে যথারীতি এক্ষেত্রেও প্রথম বিভাগে উত্তির্ন হয়েছেন।বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সাথে সাথে ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। এখানেও তিনি পিছিয়ে নয়-সফলতার সাথে উক্ত রাজনৈতিক সংগঠনের শীর্ষ পদে নেতৃত্বও দিয়েছেন।শরিফুল হাসান শিশির প্রকৃত দেশপ্রেমিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ধুদ্ধ একজন বাঙালী।
ছাত্রজীবন থাকাকালীন সময়ে তাঁর লেখালেখির সূচনা হয়।২০০৮-১১সাল পর্যন্ত পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এর গণিত লেখক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।২০১২সালে আল ফাতাহ পাবলিকেশন্স এর আর এন্ড ডি অফিসার হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন।
মায়ের চাওয়া -মোঃ মোশফিকুর রহমান
২০১৫সালের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ট্রেনিংয়ে মনোনীত হোন।ট্রেনিং শেষে ২০১৬সালে গাজিপুর হাইওয়ে থেকে বাংলাদেশ পুলিশের সার্জেন্ট হিসাবে যোগদান করেন।২০১৮সালে বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল সিকিউরিটি ও প্রোটেকশন ব্যাটালিয়ান(এস পি বি এন ২)ফোর্সে কর্মরত ছিলেন।এবং ঐ বছরের শেষে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক সেকশনে কর্মরত ছিলেন।বর্তমানে কর্মরত আছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে।
অনলাইনে লেখালেখি শুরু করেন ২০১১সাল থেকে।২০১১থেকে ১৪সালের পুরোটা সময়ে স্বপ্নিল শিশির নামে ফেইসবুক জগতে পরিচিতি লাভ করেন লেখক হিসাবে।ঐ সময়ে তিনি ইংলিশে বই লিখতেন যা বর্তমানেও আমাজনে পাওয়া যাচ্ছে। মূলতঃ বাংলা ভাষায় লেখালেখি শুরু করেন বাংলাদেশ পুলিশে যোগদানের পর থেকে।ফেইসবুককে তিনি বাংলাদেশের সিটিজেন জার্নালিজমের মূল প্লাটফর্ম হিসেবে দেখেন।এবং বহুদিন ধরে এই অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করছেন বলে দাবী করেন।বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন কার্যক্রম ও প্রশংসাজনক উদ্যোগকে জনগণের সামনে তুলে ধরার মহৎই কাজ করে যাচ্ছেন ফেইসবুক সুবাধে নিঃস্বার্থভাবে।
শরিফুল হাসান শিশির ২০১৬ সালে এপ্রিলের ২৭তারিখ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন।বর্তমান তিনি স্বপরিবারে সিলেটে বসবাস করছেন।
তিনি লেখালেখি করছেন বেশ হাসিমুখে।
এই গুণী লেখকের ২০২০সালের একুশে বই মেলায় তাঁর স্বরচিত তিনটি বই প্রকাশিত হতে যাচ্ছে এবং আত্মপ্রকাশ ঘটবে প্রকাশিত গ্রন্থের লেখক হিসাবে।
জসিম বুক হাউজ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হচ্ছে “মুক্তির আলো” ও রক্তাক্ত ১৫ই আগস্টের শহীদেরা।
এবং ত্রয়ী প্রকাশনী থেকে “বঙ্গবন্ধুর শৈশব কৈশোর ও শিক্ষা জীবন”।আমি আশাবাদী তাঁর পূর্বের সমস্ত সাফল্যের ধারাবাহিকতা এবারেও অক্ষুণ্ণ থাকবে।