১২ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

টুঙ্গিপাড়ায় টিফিনে প্রতিদিন খাবার পাবে স্কুলের শিক্ষার্থীরা

admin
প্রকাশিত জানুয়ারি ৮, ২০২০
টুঙ্গিপাড়ায় টিফিনে প্রতিদিন খাবার পাবে স্কুলের শিক্ষার্থীরা

Sharing is caring!


Manual7 Ad Code

রকিবুল ইসলাম, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জঃ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় টিফিনে প্রতিদিন খাবার পাবে ৩৩ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন বাড়ি থেকে টিফিন বয়ে আনা থেকে রেহাই পেল তারা। তাই তাদের আনন্দ যেন ধরে না। সপ্তাহে তিনদিন সবজির খিচুরি আর তিনদিন ডিম ভূনা সাথে খিচুরি। মঙ্গলবার থেকে প্রতিদিন দুপুরে খাবার পাওয়ার আনন্দে খুবই খুশি শিক্ষার্থীরা। এজন্য প্রতি শিক্ষার্থী নতুন টিফিন বক্স কিনে রেখেছে।

Manual3 Ad Code

নিলফা বয়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী কেয়া মণি ও রুমানা আক্তার বলেন, স্কুল ছুটির আগে খুব খিদা লাগে। স্কুলের পড়াশোনায় তখন মন বসতে চায়না। এখন খাবার দেয়া হচ্ছে তাই আর সমস্যা থাকবেনা। বাড়ি থেকে খাবার বয়ে আনা বাড়তি ঝামেলা। টিফিনের সময় এ হালকা খাবার খাওয়ার পর স্কুল ছুটির অনেক আগেই খিদে লাগে। স্কুলেই খাবার দিচ্ছে। তাই এ দুই সমস্যা থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি। তাই আমরা ভীষন খুশি।

নিলফা বয়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিপ্তী রানী বিশ্বাস বলেন, আমাদের স্কুলে উপস্থিতির হার ৯৭ ভাগ। টিফিনের পর স্কুল পালানোর প্রবণতা রয়েছে। মিডডেমিল চালু করা হয়েছে এখন স্কুলে শতভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত হবে। স্কুল পালানো বন্ধ হয়ে যাবে। ক্ষুধায় শিশুরা ক্লান্ত হবেনা। ক্লাসে তারা মনোযোগী হয়ে উঠবে। শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাবে।

সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৩৩ টি বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার চালু হলো এই মিল কার্যক্রম। শিগগির বাকি স্কুলগুলোতেও শুরু হবে। সারাদেশের আরও ১৬ টি উপজেলায় একইরকম খাবার বিতরন শুরু হবে। প্রতিদিন প্রতিটি শিশুকে ৬৩০ কিলো খাবার দেওয়া হবে। তিন দিন সবজি খিচুড়ি, বাকি তিনদিন ডিম খিচুড়ি। আমরা চাই, শিশুদের আর যেন ক্ষুধা নিয়ে ক্লাস করতে না হয়। ২০২৩ সালের মধ্যে আমরা সব বিদ্যালয়ে মিডডেমিল চালু করবো।

আজ মঙ্গলবার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার নিলফা বয়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের মাঝে রান্না করা খিচুড়ি বিতরন করেন প্রাথমিকও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন ও সচিব আকরাম আল হোসেন। দারিদ্রপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসুচির আওতায় স্কুল মিল কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তারা।

গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, আমরা খুবই খুশী যে, শিশুদের মাঝে রান্নাকরা খাবার বিতরনের মত মহতি এই কাজ টুঙ্গিপাড়া থেকে শুরু হলো। এই মাটিতে বঙ্গবন্ধু জন্মেছেন। তিনি এই মাটিতেই শুয়ে আছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই মাটিতেই জন্ম নিয়েছেন। সেই মাটির শিশুদের ক্ষুধাকাতর অবস্থায় ক্লাস করতে হবে না। এর চেয়ে বড় সুখের কিছু নেই।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর খুলনা অঞ্চলের সাব হেড মাহফুজুল আলম বলেন, চাল. ডাল, তেল, সবজি দিয়ে রান্না করে পুষ্টি সম্পন্ন খিচুরি খওয়ানো হবে। পাশাপাশি ডিম খিচুরিও দেয়া হবে। স্কুলের আশপাশে নির্ধারিত কৃষকের উঠানে উৎপাদিত নিরাপদ সবজি খিচুরিতে ব্যবহার করা হবে। পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেয়ে শিশুরা সঠিক পুষ্টি পাবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রাথমিক ও গনশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, শিশুদের জন্য আর বিস্কুট নয়, খাবার দেওয়া হবে। ২০২০-২১ অর্থবছর হতে পর্যায়ক্রমে দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাথীদের স্কুল ফিডিং প্রকল্পের আওতায় ডিপিপি প্রণয়নের কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে আছে। দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝরে পড়া রোধ, ক্লাসে ধরে রাখা এবং শিক্ষার মান বাড়াতে সব শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবার দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতীয় স্কুল মিল নীতিমালা ২০১৯-এর খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার নিলফা বয়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দারিদ্রপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসুচির আওতায় স্কুল মিল কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

Manual6 Ad Code

তিনি আরো বলেন, বিএনপি জামায়াতের সময়ে ঝড়ে পড়ার হার ছিলো ৫০%। এখন তা ১৮% এ এসে দাড়িয়েছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা ঝড়েপড়ার হার শূণ্যতে নামিয়ে আনবো। আমাদের শিক্ষার্থীদের ২০৪১ সালের উপযুক্ত করে গড়ে তুলবো।

Manual5 Ad Code

এর আগে সকাল সাড়ে ৯ টায় প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন এমপি ও সচিব মোঃ আকরাম-আল- হোসেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে তারা পবিত্র ফাতেহাপাঠ ও বঙ্গবন্ধুর রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মোনাজাত করেন। পরে তারা টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু ভবনে রক্ষিত পরিদর্শন বইতে মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করেন।

এরপর সকাল সাড়ে ১০ টায় মন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর বাল্যকালের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জি.টি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু গ্যালারী উদ্বোধন করেন। পরে তিনি গ্যালারিটি ঘুরেঘুরে দেখেন।

Manual4 Ad Code

0

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code