১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৬ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

ভালো লাগা আর ভালোবাসার মানুষ পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম পিপিএম-বিপিএম

admin
প্রকাশিত অক্টোবর ২৮, ২০১৯
ভালো লাগা আর ভালোবাসার মানুষ পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম পিপিএম-বিপিএম

Sharing is caring!

ফয়সাল আজম অপু,বিশেষ প্রতিনিধি : কয়েক বছর আগের কথা। ২০১৬ সাল জুলাই মাস তারিখ ও দিনটা মনে নেই। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়। সবে মাত্র পুলিশ সুপার টি এম মোজাহিদুল ইসলাম সাহেব যোগদান করেছেন।

সেদিনের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আমার যাওয়াটা ছিলো, নবযোগদানকৃত পুলিশ সুপারের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ ও এলাকার কিছু সমস্যার কথা অবহিত করা।

এক গুচ্ছ রজনীগন্ধার শুভেচ্ছা জানানোর পর যত খোশ গল্প।

প্রথম পরিচয়েই আন্তরিকতার সাথে আমাকে আপন করে নিয়ে, জেলার সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নে সাংবাদিক হিসেবে আমার নিকট সহযোগিতা কামনা করলেন।

প্রথম পরিচয়ে আমিও সদা হাস্যোজ্জ্বল, কথার রাজা, মিষ্টি মানুষটির বন্ধু সুলভ আচরণ ও সু-মধুর ব্যবহারে মূগ্ধ ও অভিভূত হয়ে গেলাম।

তিনি বললেন আমার নাকি জেলার সাংবাদিকদের মধ্যে প্রথম সৌজন্যে সাক্ষাৎ। তাই নিজেকে কেনো জানি বড় ভাগ্যবান মনে হলো।

কথোপকথনের এক পর্যায়ে বলেই ফেললাম, জেলার সদর থানার মহারাজপুরে একজন এমপির মদদে, ঈদ আনন্দ মেলার নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া।

শুনেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন, বললেন একজন এমপির এই চরিত্র? তিনি আরও বললেন, আপনারা সাংবাদিকরা নিউজ করতে পারেননা?
বললাম নিউজ করে কি লাভ? আইনের তো আর প্রয়োগ হয়না? তিনি উচ্চ কন্ঠে বললেন, আপনার জাতীয় পত্রিকায় নিউজ করুন, পত্রিকা দিন আমি শক্ত হাতে ব্যবস্থা নিব।

শুনে মন ভরে গেলো, রাত জেগে মেলা উপভোগ করলাম। অতঃপর “চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঈদ আনন্দ মেলার নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া” শিরোনামে তৎসময়ে কর্মরত জাতীয় “দৈনিক বর্তমান” পত্রিকায় জুয়ার ফটো সংবলিত নিউজ প্রকাশ করলাম।

এবং পত্রিকা পুলিশ সুপার মহোদয়ের হাতে তুলে দিলাম। ভাবলাম দেখি কি হয়?

পিছন ফিরে তাকানোর সময় আর হয়নি, সে রাতেই স্পেশাল বাহিনী নিয়ে একশান।

মেলার জুয়া, ভ্যারাইটি শো ভেঙ্গে তচনচ করে দিলো জেলা পুলিশ বাহিনী।

এ থেকেই পুলিশ সুপার মহোদয়ের সাথে হৃদরতাপূর্ণ আর মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠলো আমার।

কেনো জানি, আমরা উভয়-উভয়ের ভক্ত হয়ে গেলাম।

অতপর দীর্ঘ পথচলা। দেখতে দেখতে জেলার পুলিশ বাহিনীর প্রধানের সাথে কয়েকটি বছর কাধে কাধ মিলিয়ে পথ পাড়ি দেয়া। কতবার দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে।

আমি বিভিন্ন সময় জেলার সুযোগ্যে পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম সাহেবের সফলতার নিউজ প্রকাশ করতে থাকলাম।

আমি এতে করে ভালোবাসার মানুষ বনে গেলাম। অতঃপর প্রকাশ করলাম সফলতার এক বছরের ফিরিস্তি। সফলতার দুই বছরের ফিরিস্তি।

সম্প্রতি আজ ২৮ অক্টোবর সোমবার বিকাল ৫ টার সময় আমার পাশে থাকা, প্রিয় মানুষটির এডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতির খবর পেলাম।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল সাহেব আমাদের ছেড়ে অন্য কোনো কর্মক্ষেত্রে চলে যাবেন। আমরা হয়তো পাবো নতুন একজন পুলিশ সুপারকে।

কিন্তু হয়তো কোনদিনই ফিরে পাবোনা এরকম একজন, বড় মনের মহামানবকে। জানিনা, তিনি কোনদিন আমার মতো একজন ক্ষুদে সাংবাদিককে মনে রাখবেন কিনা? তবে কোনদিনই আমি ভুলতে পারবোনা আমার ভালো লাগা আর ভালোবাসার মানুষটিকে। দোয়া রইবে যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন, সু্স্থ থাকুন, সুখে থাকুন।